logo

সব নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা উচিত: প্রধানমন্ত্রী

এফই ডেস্ক | Thursday, 6 May 2021


নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের স্বার্থে সব ধরনের নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে নতুন চারটি মেরিন একাডেমির পাশাপাশি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও শতাধিক জলযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এবিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

শেখ হাসিনা বলেন,‘ নৌযানে যাতায়াতকারী এবং পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। যখনই যারা (নৌপথে) চলাচল করবেন, একটু সাবধানে চলাচল করবেন।

“সব থেকে দুঃখজনক যে আমাদের যারা এই নৌযানগুলো চালান বা পরিচালনা করেন বা যারা ব্যবসাও করেন, যাত্রীদের সুরক্ষা যেমন তাদের দেখতে হবে আবার যাত্রীদেকেও নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেই সব নৌযান চলাচল করে, আমি মনে করি প্রত্যেকটারই রেজিস্ট্রেশনের সিস্টেম থাকা উচিত। এই রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে অনেক সময় কে, কার, কি…ক্ষতিপূরণের কি ব্যবস্থা সেগুলো করা যায় না।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধের লকডাউনে নৌ চলাচলও বন্ধের মধ্যে গত সোমবার সকালে মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে বালুবাহী নৌযানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে স্পিডবোট ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এই প্রাণহানির দায় কেউ নিতে চাইছে না।

নৌচলাচল তদারককারী কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ বলছে, ঘাট বন্ধের মধ্যে ওই স্পিডবোট চলা আটকানোর দায়িত্ব ছিল নৌ পুলিশের। নৌপুলিশ পাল্টা বিআইডব্লিউটিএকে অভিযোগবিদ্ধ করছে।

নৌদুর্ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

দুর্ঘটনা রোধে নৌকর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে জলযান পরিচালনার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা নৌযানে কতজন মানুষ উঠতে পারে, চলতে পারে সেটা বিবেচনায় না রেখে ঠেলাঠেলি করে এক সাথে বেশি লোক উঠতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

“সেখানে নিজেদের জীবনটা চলে যেতে পারে, সেই কথাটা বিবেচনা নিয়ে এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ থাকতে হবে।”

দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে নৌ পথে চলাচলের নিয়মগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ যেখানে প্রতি দুই মাস পর পর ঋতুর পরিবর্তন হয়। এখন কালবৈশাখীর সময়। নৌ পথে চলাচলকারী সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

“তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, যেই মানুষগুলোর জীবন হারায় আর যারা আপনজন হারিয়ে বেঁচে থাকেন তাদের কষ্টের কথাটাও সবাইকে একবার চিন্তা করার অনুরোধ জানাই।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ঈদ উদযাপনের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটোছুটি না করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আত্মীয় স্বজনের সাথে তো বেঁচে থাকলে দেখা হবে। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই যে ঈদ উপলক্ষ্যে সবাই ছুটোছুটি না করে যে যেখানে আছেন, সেভাবেই ঈদটা উদযাপন করেন।

“কারণ এই যাতায়াতটা করতে গেলেই কে যে সংক্রামিত আপনি জানেন না। কিন্তু সে যখন অন্য জায়গায় যাবে অনেক লোককে এই করোনা সংক্রমিত করবে এবং তাদের জীবন নিয়ে সংশয় দেখা দেবে।”

মহামারীর সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার যাতায়াতটা সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসময়ে দেশের মানুষের অর্থ সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলো যেন অব্যাহত থাকে এবং সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সরকার সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় সরকারে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে দুস্থ মানুষদের সহযোগিতায় সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান সরকারপ্রধান। 

বাংলাদেশ সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রান্ত থেকে এই সময় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী,মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।