logo

সংখ্যার শঙ্কা ও জাদুময় সংখ্যা

শুভদীপ বিশ্বাস | Thursday, 13 May 2021


মনে করুন, আপনি বন্ধুদের সাথে লুডো খেলছেন। আপনার বাকি বন্ধুরা বেশ এগিয়ে, এই মুহূর্তে খেলায় টিকে থাকতে হলে আপনার বেশ ভালো একটা দান ওঠা দরকার। আপনি ছক্কাটা বেশ কায়দা করে ঝাঁকিয়ে লুডোর বোর্ডের ওপর গড়িয়ে দিলেন। ছয়! আপনি খুশি হয়ে আবারও চেষ্টা করলেন, এবারও ছয় উঠল। কেয়াবাৎ! খুশিতে ডগমগ হয়ে আপনি তৃতীয়বারের মত ছক্কাটা গড়িয়ে দিলেন। এবার আপনার মুখটা বেজার হয়ে গেলো, তৃতীয়বারও ছয় উঠেছে, পুরো দানটাই বাতিল।

নিয়মটা এমনই কেন হলো যে, পরপর তিনটে ছয় উঠলে সে দান বাতিল হয়ে যাবে? কিংবা ধরুন, আপনি কোনো একটা কাজ করতে চেষ্টা করছেন, প্রথমবারের চেষ্টায় সেটা পারলেন না। দ্বিতীয়বারও হলো না। তারপরও মোটামুটি বেশ ভালো একটা সম্ভাবনা থাকে আপনি তৃতীয় এবং শেষবারের মতো একবার চেষ্টা করে দেখবেন। চেতনে হোক বা অবচেতনে, অনেকক্ষেত্রেই আমরা এরকম সংখ্যা মেনে চলার চেষ্টা করি। এটাকে কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না, কিন্তু এ-ও অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু সংখ্যা একটু বেশিই গুরুত্ব পায়। গোটা পৃথিবী জুড়েই এমন সব সংখ্যা ছড়িয়ে আছে, যেগুলো বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন জনপদে ভালো কিংবা খারাপের উপাধি পেয়েছে, হয়েছে মঙ্গল কিংবা অমঙ্গলের নির্ধারক। আজকের লেখায় জানবো এমনই সংখ্যাশঙ্কুল কথাবার্তা। প্রথমেই যাওয়া যাক ‘অশুভ’ সংখ্যার দিকে।

অমঙ্গল বয়ে আনা সংখ্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত সংখ্যা খুব সম্ভবত ১৩। এমন কোনো ব্যক্তি হয়তো পাওয়া যাবে না, যিনি জীবনে একবার হলেও ‘আনলাকি থার্টিন’ কথাটির মুখোমুখি হননি। আমাদের এই তৃতীয় বিশ্বের দেশে এই ১৩ সংখ্যাটির বড় কোনো প্রভাব কার্যত খুঁজে পাওয়া না গেলেও পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর অনেক প্রভাব রয়েছে।

অনেক দেশে কোনো বহুতল হোটেল বা ভবনের লিফটে কখনও ত্রয়োদশ ফ্লোরে যাওয়ার বোতাম খুঁজে পাবেন না। কারণ তাত্ত্বিকভাবে ভবনগুলোতে কোনো ত্রয়োদশ ফ্লোর থাকেই না, দ্বাদশ ফ্লোরের পরের ফ্লোরটাই সেখানে চতুর্দশ ফ্লোর হয়। এমনও দেখা গেছে, অনেকগুলো এয়ারলাইনের প্লেনে ১৩তম কোনো সারি নেই। যারা মোটর রেসের ড্রাইভার, তাদের অনেকেই সচেতনভাবে তাদের গাড়ির নাম্বার হিসেবে ১৩ সংখ্যাটি বর্জন করেন।

কিছু কিছু শহরে তো কোনো ১৩ নম্বর রাস্তাই থাকে না! অনেকে মাসের ১৩তম দিনটিকে খুবই ভয় পান, আর সেই দিনটি যদি শুক্রবার হয়, তাহলে তো কথাই নেই। এমনকি পরিসংখ্যানে এটাও দেখা গেছে, কোনো মাসের ১৩ তারিখ যদি শুক্রবার হয়, তবে সেদিন গোটা আমেরিকায় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় ৮০ শতাংশ কমে যায়।

১৩ বা থার্টিন নামক এই আপাত নিরীহ সংখ্যাটিকে এরকম দস্তুরমতো ভয় পাওয়াটা আসলে একটা মানসিক রোগই, এর একটা কঠিন পোশাকি নামও আছে, ট্রাইস্কাইডেকাফোবিয়া (triskaidekaphobia)। এই তেরোভীতির পেছনে অনেকগুলো মিথ বা পুরাকাহিনীর অবদান রয়েছে। যেমন, নর্স পুরাণে একটি কাহিনী আছে, যেখানে বারোজন দেবতা একত্রে জমায়েত হয়ে উৎসব করছিলেন। উৎসব চলাকালে হঠাৎ ১৩তম একজন দেবতা সে স্থানে প্রবেশ করেন। এর ফলাফল হয় ভীষণ খারাপ, উক্ত দেবতাদের মধ্যে একজন মারা যান, এবং বিষম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া স্ক্যান্ডিনেভিয়ান টিউটোনিক লোককথায় বলা হয় যে, ডাইনীরা নাকি তাদের সাধনার জন্য ১৩ জনের একটি দল তৈরি করে।

তবে ১৩ সংখ্যাটির এরকম অমঙ্গলের চিহ্ন হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি হলো যীশুখ্রিস্টের শেষ নৈশভোজের, যাকে আমরা ‘দ্য লাস্ট সাপার’ বলে জানি। সেই ভোজে মোট ১৩ জন মানুষ ছিলেন, আর ১৩তম মানুষটি ছিলেন যীশুশিষ্য জুডাস, যিনি কিনা শেষপর্যন্ত প্রভুকে ধরিয়ে দেন। অতএব, এতগুলো জাঁদরেল কারণ থাকার জন্য শেষ পর্যন্ত ১৩ হয়ে উঠলো গোটা পৃথিবীতে অমঙ্গলের ঝাণ্ডাধারী।

শুধু ১৩ নিয়েই অনেকগুলো কথা বলা হয়ে গেলো। এবার অন্য সংখ্যার দিকেও নজর দেয়া যাক। কোন ধরনের নাম্বার সৌভাগ্য বয়ে আনে? জোড়, না বিজোড়? জুয়াড়িদের কাছে কিন্তু বিজোড় সংখ্যা অধিক সৌভাগ্যের প্রতীক। এর একদম সঠিক কারণ অবশ্য জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হয়, জোড় সংখ্যাগুলি নিঃশেষে বিভাজ্য বলে এদের ক্ষমতা কম। কিন্তু অপরদিকে বিজোড় সংখ্যাকে সেভাবে ভাঙা যায় না, ক্ষমতাটাও বেশি। আমাদের সমাজেও দেখা যায়, শুভ কাজে কাউকে উপহার বা পারিশ্রমিক দেবার সময় টাকার পরিমাণটা যাতে জোড় না হয়, সেজন্য এক টাকা যোগ করে সেটা বিজোড় করে দেয়া হয়। যেমন একশ এক টাকা, কিংবা এক হাজার এক টাকা।

হুমায়ূন আহমেদের হিমুর উপন্যাসগুলো পড়লে তিন সংখ্যাটির জাদু সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই জানা থাকার কথা, তিনি বেশ অনেকবারই এ সংখ্যাটি গুরুত্বসহকারে তার লেখায় তুলে এনেছেন। তিনকে মোটামুটি সবক্ষেত্রেই শুভ ধরা হয়, পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই। কোনো কাজে তিনবার চেষ্টা করার কথাটা তো শুরুতেই বলা হলো, এমন তিন-কেন্দ্রিক কাজকর্ম কিন্তু আমরা আরও করে থাকি। তিন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

‘আজ হিমুর বিয়ে’ বইটিতে পাওয়া হুমায়ূন আহমেদের ভাষাতেই বলি, “পীথাগোরাস বলে গেছেন, তিন খুব শক্তিশালী সংখ্যা। তিনে আছে আমি, তুমি এবং সর্বশক্তিমান- তিনি। সেজন্যই ত্রিভুবন, ত্রিকাল ও ত্রিসত্যি। কবুল বলতে হয় তিনবার। তালাক বলতে হয় তিনবার। পৃথিবীতে মৌলিক রঙও মাত্র তিনটা, লাল, নীল এবং হলুদ। বাকি সব রঙ এই তিনের মিশ্রণ।”

এই কারণগুলো ছাড়াও খৃস্টান ধর্মের পবিত্র ত্রয়ী বা ‘হলি ট্রিনিটি’ তিন সংখ্যাটির গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ। হিন্দুধর্মেও আছেন ত্রিদে - ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। ইসলাম ধর্মেও তিনটি পবিত্র স্থান আছে, মক্কা, মদিনা ও জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ। প্যাগান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ছিল, মাটি, পানি ও বায়ু, এই তিন উপাদানে পৃথিবীর সৃষ্টি।

তবে কিছু কিছু মতবাদ বা বিশ্বাসে তিন সংখ্যাটিকে সমানভাবে অমঙ্গল বলেও গণ্য করা হয়। একটি মতবাদে এমনটি বিশ্বাস করা হয়, সবসময় একসাথে তিনটি করে জিনিস ভাঙে। অর্থাৎ একটি জিনিস ভাঙলে সাথে আরও দু’টি জিনিস ভাঙবেই। তাছাড়া, একটি দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে তিনটি ম্যাচ জ্বালানোও অমঙ্গল, এটি নাকি মৃত্যু ডেকে আনে! তিন নিয়ে আরেকটি কুসংস্কার আছে, বিখ্যাত মানুষরা যখন মারা যান, তখন নাকি পরপর তিনজন একসাথে মারা যান। কিন্তু এটি কি আসলেই কুসংস্কার? সম্প্রতি ইরফান খান, সুশান্ত সিং রাজপুত, আর ঋষি কাপুরের মৃত্যুর কথাটা একবার ভেবে দেখেছেন কি?

বিক্ষিপ্ত সংখ্যা নিয়ে আরও কিছু মজার কুসংস্কার আছে। এক বিশ্বাসে বলা হয়, কারো শরীরে যদি অনেকগুলো আঁচিল থাকে, আর সে আঁচিলের সংখ্যা গুণে ব্যক্তিটি যদি কাউকে বলে দেন, তাহলে ওগুলো গায়েব হয়ে যাবে। আবার এমনও শোনা যায়, কখনোই নিজের কাছে কী পরিমাণ টাকা বা সম্পত্তি আছে, তা গুণতে যাওয়া উচিত নয়; গুণলে তা উধাও হয়ে যেতে পারে। কেউ কেউ এমনটাও ভাবেন, জন্মের পর নবজাতকের ওজন মাপতে যাওয়াটা একদম উচিত নয়। প্রাচীন কোনো স্মৃতিসৌধে থাকা পাথরের সংখ্যা গুণতে যাওয়াও অমঙ্গল বয়ে আনে বলে প্রচলিত আছে।

বয়স নিয়েও অনেক জায়গায় অনেক কুসংস্কার আছে। মনে করা হয়, একুশ বছর বয়স নাকি সৌভাগ্যের বয়স। এ বয়সে একজন মানুষ যত চাইবে, ততই সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবে। আবার তেষট্টি বছর নাকি বয়স হিসেবে ততোধিক খারাপ, বেশিরভাগ মানুষ নাকি তেষট্টি বা তার আগেই মারা যায়। যদি কেউ একবার তেষট্টি পেরিয়ে চৌষট্টিতে পা দিতে পারে, তাহলে সে দীর্ঘায়ু হবে।

বয়সের ব্যাপারটায় জাপানিরা এতটাই বিশ্বাসী যে তারা এর একটা নামও দিয়ে দিয়েছে, ‘ইয়াকুদোশি’ (Yakudoshi)। ইয়াকুদোশি অনুসারে, নারীদের জন্য খারাপ বয়স হচ্ছে ১৯, ৩৩ আর ৩৭। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ২৫, ৪২ আর ৬০-এ!

আমেরিকাতে যেমন ১৩ সবচেয়ে ভয়ংকর সংখ্যা, তেমনি ইতালিতে সবচেয়ে ভয়ংকর সংখ্যা হচ্ছে ১৭। এর কারণ হচ্ছে, ১৭কে যদি রোমান হরফে লেখা হয়, তাহলে সংখ্যাটি হয় - XVII, যার অক্ষরগুলোকে একটু ওলটপালট করে নিলে সেটা হয়ে যায় VIXI। ইতালিয়ান ভাষায় এর অর্থ “আমি মৃত”। আমেরিকানদের ১৩-র মতো ইতালিয়ানরাও ১৭ সংখ্যাটি্কে গাড়ি কিংবা ভবনের ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে বর্জন করে। আবার উল্টোদিক থেকে, ইতালিয়ানরা ১৩-কে অতীব সৌভাগ্যের সংখ্যা মনে করে!

অনেক জায়গায় চারকে খুব মাঙ্গলিক সংখ্যা মনে করা হয়। এর কারণ হিসেবে হৃৎপিণ্ডের চারটি প্রকোষ্ঠ, কিংবা প্রকৃতির চারটি ঋতু ইত্যাদি উদাহরণ দেখানো হয়। কিন্তু চীন, কোরিয়া, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে চারকে ভয়ংকর দুর্ভাগ্যের সংখ্যা বলা হয়ে থাকে, কারণ ওই সব দেশের ভাষায় চার সংখ্যাটি জোরে উচ্চারণ করলে সেটা অনেকটা সেসব ভাষায় ‘মৃত্যু’ শব্দের উচ্চারণের মতো শোনায়।

তিনটে সাত! জুয়াড়িরা তো এই সংখ্যাটিকে পারলে পুজো করে। জ্যাকপট মেশিনে জুয়া খেলার সময় কিংবা লটারির নাম্বার হিসেবে তিনটে সাত আসাটা চূড়ান্ত ভাগ্যের ব্যাপার। আগেই বলা হয়েছে, বিজোড় সংখ্যা জুয়াড়িদের জন্য খুব সৌভাগ্যের মনে করা হয়, সেদিক দিয়ে সাত তো এককাঠি সরেস। এর কারণ হচ্ছে, খৃস্টান ধর্মমতে মোটমাট সাতদিন ধরে ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, প্রাচীন মতবাদ অনুসারে সৌরজগতে সাতটি গ্রহ আছে, আর সাতটি সাগর আছে, সপ্তাহে সাতটি দিন আছে, আর গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে সাতটি আশ্চর্য- সপ্তাশ্চর্য।

হলিউডে একটা মুভি ট্রিলজি তৈরি হয়েছিলো, নাম, দ্য ওমেন। গল্পটা ছিল এমন, অ্যান্টিক্রাইস্ট একটি শিশুরূপে পৃথিবীতে আসে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে নানা কাণ্ড ঘটায়, অনেকগুলো খুন করে। একটা সময় বাচ্চাটির বাবা তাকে সন্দেহ করতে শুরু করেন, এবং হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করেন, বাচ্চাটির মাথার তালুতে প্রাকৃতিকভাবে ৬৬৬ সংখ্যাটি লেখা।

হ্যাঁ, আমরা ৬৬৬ বা তিনটি ছয়ের কথাই বলছি। এই লেখার শুরুতেও লুডো খেলায় তিনটে ছয় ওঠায় দান বাতিলের কথা বলেছিলাম। কিন্তু, কী আছে এই তিনটে ছয়ের মধ্যে?

বাইবেলমতে, ৬৬৬ হচ্ছে দ্য বিস্ট, বা শয়তান বা অ্যান্টিক্রাইস্টের সংখ্যা। সংখ্যাটা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কেউ কেউ এতই ভয় পান যে, কোনো জায়গায় এটি দেখলে; তা হোটেলের রুম নম্বর হোক, গাড়ির নম্বর হোক, কোনোকিছুর দাম হোক, কোনো ফ্লাইটের নম্বর, এমনকি কোনো ফোন নম্বরের অংশও যদি হয়, তাহলেও তারা সেটিকে এড়িয়ে যেতে চান। ৬৬৬-কে ভয় পাওয়াটাও একটা মানসিক রোগ, এর নামটা বেশ লম্বা আর খটমটে (যদি আপনার এক বা একাধিক ত্রুটিপূর্ণ দাঁত থাকে যা আপনি তুলে ফেলতে চান, তবে উচ্চারণ করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন)। হেক্সাকোসিওইহেক্সেকনটাহেক্সাফোবিয়া (hexakosioihexekontahexaphobia)। মজার ব্যাপার হচ্ছে, চীনা সংস্কৃতিতে আবার ৬৬৬ খুবই সৌভাগ্যজনক একটা সংখ্যা, চীনারা মনে করেন, সংখ্যাটি তাদের ভাগ্য ফিরিয়ে দেবে।

আফগানিস্তানের কিছু কিছু মানুষের মধ্যে একটা কুসংস্কার আছে, ৩৯ সংখ্যাটিকে তাঁরা প্রচণ্ড ভয় পান। আফগানি ভাষায় ৩৯ সংখ্যাটির অর্থ হচ্ছে ‘মর্দা-গো’ (Morda-Gow), অর্থাৎ ‘মৃত গরু’। এটি আসলে তাঁদের ভাষার একটি গালি। কাজেই যেকোনো জায়গায় যদি কোনো আফগান এই ৩৯ সংখ্যাটি দেখেন, সেক্ষেত্রে তিনি তৎক্ষণাৎ দিক পালটে অন্যদিকে চলে যান।

এসব ‘ভালো-মন্দ’ সংখ্যার দোষ-গুণ নির্ধারণ করা হয়েছে প্রকৃতিতে এগুলোর উপস্থিতি কিংবা প্রভাব লক্ষ করে, নয়তো কোনো বিশ্বাসকে অনুসরণ করে। কিন্তু ভাগ্য কি কোনো হাতের রেখা বা মামুলি সংখ্যায় থাকে? নিছক সংখ্যার কি সাধ্য আছে, ভাগ্যকে সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যে পরিণত করার? অবশ্যই নয়। তাই নিছক মজার বশে সংখ্যা নিয়ে যতই খেলা হোক না কেন, এমন কুসংস্কার কখনোই মনে ধারণ করা উচিত হবে না।

শুভদীপ বিশ্বাস বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগ, তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

[email protected]