logo

শিক্ষক নিয়োগ গণবিজ্ঞপ্তির স্থগিতাদেশে আবেদনকারীদের হতাশা

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম | Thursday, 6 May 2021


এনটিআরসিএর ৩য় গণবিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশের খবরে চরম হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাকুরী প্রত্যাশীদের বড় একটি অংশ।

আবেদন প্রক্রিয়া শেষের মাত্র ৬ দিনের মাথায় মহামান্য হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশ জারির পর সনদধারীরা তাদের এই হতাশা ব্যক্ত করেন।

আজ (০৬ মে, ২০২১) এনটিআরসিএর ৩য় গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিত করার আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষার সনদধারীদের মধ্যে যারা আদালতে গিয়েছিলেন তাদেরকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করার নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তাছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিনের বদলি আদেশও চাকরি প্রত্যাশীদের মাঝে সংশয় তৈরি করেছে।   

এর আগে গত ৩ এপ্রিল, এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিনকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে বদলির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

চলমান প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেতে ৯০ লক্ষের বেশী আবেদন জমা হয় যা এ যাবত কালের যেকোন পরীক্ষায় রেকর্ড এবং এ থেকে এনটিআরসিএ ৯০ কোটি টাকা ফি হিসেবে পেয়েছে। প্রতিটি আবেদনে ১০০ টাকা হারে ফি নির্ধারিত ছিল।

সুব্রত নামে এক আবেদনকারী দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেন, শিক্ষক নিয়োগ বরাবরই কোন না কোন রিট বা স্থগিতাদেশের ফলে বিলম্বিত হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর এই চক্রে আমি ৬০ টির বেশী আবেদন করেছিলাম শুধু একটা চাকরির আসায়। অন্যের কাছ থেকে ধার করে ফি দিয়েছি। এবার বয়সের শিথিলতা থাকায় ৪৩ বছর বয়সে এসেও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলাম। আগেরবার ৩৫ বছরের বেশী হওয়ায় আবেদন করতে পারিনি। এরপর যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় তাহলে আর কিছু বলার নেই।“

তিনি আরও বলেন, ২০০৫ সালে শুরু হওয়া এনটিআরসিএ মাত্র দুইটি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরেছে। যার কারনে লক্ষ লক্ষ সনদধারীরা এখনও বেকার অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সঙ্কট চরমে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ বলেন,শিক্ষক সনদধারীদের বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত। নিবন্ধন পরীক্ষার সময় একটা ফি পরিশোধ করতে হয়। তিনটি ধাপে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে আবার গণবিজ্ঞপ্তিতে আলাদা ফি দেওয়া এই বেকারকের জন্য অনেক বড় একটা চাপ।

ঢাকা শহরের একটি কলেজের একজন অধ্যক্ষ বলেন, আগে শুধু পাশ নম্বর পেলেই  নিবন্ধন সনদ পেত। কিন্তু শেষের কয়েকটি পরীক্ষা থেকে মেধাক্রম চালু করা হয় এবং আগের পাস করা নিবন্ধনধারীদেরও সম্মিলিত মেধাক্রমে যোগ করা হয়। আগের পাস করা নিবন্ধনধারীরা মেধা তালিকায় পিছিয়ে পরে, কারন তখন শুধু পাশ করলেই হতো। সুতরাং আলাদা মেধা তালিকার প্রয়োজন ছিল। তাই সবার দিকটা খেয়াল রেখেই পরিকল্পনা সাজানো দরকার।

উল্লেখ্য, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রিলেভেলে নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাই ও সুপারিশ করার দায়িত্ব  বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ)। এনটিআরসিএর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারীর দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।

অবশেষে, ৩০ মার্চ শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তৃতীয় দফায় শিক্ষক নিয়োগে ৫৪ হাজার ৩০৪টি পদের মধ্যে ৪৮ হাজার ১৯৯ টি এমপিওভুক্ত শূন্যপদ। ননএমপিও পদ আছ ৬ হাজার ১০৫ টি। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ টি এমপিও পদে রিট মামলায় অংশগ্রহণ করা প্রার্থী আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন।

তাছাড়া ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন এমপিও নীতিমালা জারির আগে যারা সনদ অর্জন করা প্রার্থীরা যাদের বয়স ৩৫ এর বেশি হয়ে গেছে তারাও আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নিবন্ধন সনদধারী ও ইনডেক্সধারী শিক্ষকরাও নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পেরেছেন।

[email protected]