লকডাউনের মধ্যে কারখানা খোলায় দুর্ভোগে পড়া শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরাতে রোববার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
শনিবার দিনভর ঢাকামুখী শ্রমিকদের বিড়ম্বনা দেখার পর রাতে নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত জানায়।
বিআইডব্লিউটিএ উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাস-ট্রেন বন্ধ থাকায় পোশাক শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
“এই কারণে এই লকডাউনে সারাদেশে এখন থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
ঢাকা থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়তে পারবে কি না- জানতে চাইলে মিজানুর বলেন, “মালিকরা যদি যাত্রী পান এবং লঞ্চ ছাড়তে চাইলে ঢাকার থেকেও ছাড়তে পারবেন।”
তবে বরিশাল অঞ্চলের লঞ্চ এমভি সুন্দরবনের মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম ঝন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এভাবে কোনো লঞ্চ ছাড়া সম্ভব নয়। সকালে বললেও এই সময়ের মধ্যে একবার আসা যেত।”
অবশ্য এই সিদ্ধান্তের ফলে ফেরি পারাপারের রুটে লঞ্চ চলাচলের পথ খুলল।
লঞ্চ ও অন্য নৌযান বন্ধ থাকায় শিমুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে শনিবার দিনভর ফেরিতে গাদাগাড়ি করে মানুষ পার হচ্ছিল। ভিড়ের চাপে অনেক সময় যানবাহনও উঠতে পারছিল না ফেরিতে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় পর যে লকডাউন শুরু হয়েছে, তাতে সব শিল্প কারখানাও ৫ অগাস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে সরকারই জানিয়েছিল।
ফলে যেসব শ্রমিক ঈদের ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন, তারা ধরেই নিয়েছিলেন লকডাউনে আর ফিরতে হচ্ছে না তাদের।
কিন্তু ব্যবসায়ীদের বারবার অনুরোধে শুক্রবার সরকার জানায়, রপ্তানিমুখী কারখানা রোববার থেকে লকডাউনের আওতামুক্ত। অর্থাৎ রোববার থেকে গার্মেন্ট খোলা।
এই সিদ্ধান্ত জানার পর শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে পোশাককর্মীরা ঢাকায় রওনা হয়, যদিও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কোনো বাস নেই সড়কে। ফলে তাদের ছোট পরিবহনে কিংবা ট্রাক-পিকআপভ্যানে চেপে ভেঙে ভেঙে আসতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে রপ্তানি আয়ের অধিকাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই শিল্পের প্রায় অর্ধ কোটি শ্রমিক ছড়িয়ে আছে সারাদেশে।