Loading...

চাকরি হারালেন ত্ব-হার বন্ধু সিয়াম


চাকরি হারালেন ত্ব-হার বন্ধু সিয়াম

ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিত আবু মোহাম্মদ ত্ব-হা আদনানকে ‘লুকিয়ে’ রাখার অভিযোগে তার বন্ধু সিয়াম ইবনে শরিফ চাকরি হারিয়েছেন।

মোবাইল ফোন সেট কোম্পানি অপোর রংপুরের এইচ আর শাখায় কাজ করতেন সিয়াম। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

অপো কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, সিয়ামের বাড়িতে আদনান ‘আত্মগোপনে’ থাকা এবং আদনান নিখোঁজ থাকাকালে তাকে উদ্ধারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেওয়ার অপরাধে তার চাকরি গেছে।

এদিকে, ব্যক্তিগত কারণে গাইবান্ধর ত্রিমোহিনীতে বন্ধু সিয়ামের বাড়িতে ত্ব-হা আত্মগোপনে ছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

রংপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পর গত শুক্রবার ত্ব-হার খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় রংপুর মহানগর পুলিশ।

অপো রংপুর আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা ইশাদ ইসলাম বলেন, “ভাই আমরা তো জানতাম না যে সিয়ামের বাড়িতে ত্ব-হাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা জানার পর তার চাকরি চলে যায়।”

ত্ব-হা এখন কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে তো আর এখানে চাকরি করে না; আমরা বলতে পারব না।”

অপোর রংপুর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, “ধর্মীয় বক্তা ত্ব-হার বিষয়টি দেশের যেহেতু একটি আলোচিত ঘটনা, সেহেতু পুরো বিষয়টি জানার পর শনিবার সিয়ামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।”

এই বিষয়ে সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

গত ১০ জুন রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্ব-হা এবং তার সঙ্গী আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ এবং গাড়িচালক আমির উদ্দিনের।

সেদিন বিকেল ৪টার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা এক গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার কথাও হয়। কিন্তু তারপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়ার কথা বলেছিলেন তার স্ত্রী।

বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ১১ জুন বিকেলে রংপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন ত্ব-হার মা আজেদা বেগম।

১৮ জুন [শুক্রবার] জুমার নামাজের পর ত্ব-হা রংপুরে তার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসার খবর জানান তার শ্যালক মো. জাকারিয়া।

ওইদিন বিকেলে রংপুর ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, আবু ত্ব-হা গাইবান্ধায় তার এক বন্ধুর বাসায় ‘আত্মগোপনে’ ছিলেন।

“গাইবান্ধার ত্রিমাথায় তার বন্ধু সিয়ামের মায়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। তার সফরসঙ্গী আমির উদ্দিনের খোঁজও পেয়েছি। তাকেও ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মারুফ হোসেন বলেন, আবু ত্ব-হা এবং তার তিন সঙ্গী রংপুর থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু গাবতলী থেকে তারা গাইবান্ধায় চলে যান।

“আজ  আমরা গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, ত্ব-হা তার প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে আছেন। সেখান থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।”

ত্ব-হার পারিবারিক বাড়ি রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের আহলে হাদিস মসজিদ এলাকায়। তিনি প্রথম স্ত্রী হাবিবা নূরকে নিয়ে রংপুর নগরীর নিউ শালবন মিস্ত্রীপাড়া চেয়ারম্যান গলির একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন বিয়ের পর। ওই সংসারে তিন বছরের একটি মেয়ে এবং দেড় বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে ত্ব-হার।

কয়েক মাস আগে ঢাকায় আরেকটি বিয়ে করেন ত্ব-হা । তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা ঢাকার মিরপুর আল ইদফান ইসলামী গার্লস মাদরাসার পরিচালক ও শিক্ষক। ত্ব-হা এ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা।

ত্ব-হার মামা সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুর পর রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে নানার বাড়িতে থেকে বড় হন তিনি। ত্ব-হা কারমাইকেল কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। কোরআন শিক্ষার জন্য কিছুদিন স্থানীয় এক মাদরাসায় তালিমও নেন।

ওই সময় ত্ব-হা আহলে হাদিস আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হন। এছাড়া তিনি লাইফ ফাউন্ডেশন, আলোর পথ এবং একাডেমিক কোরআন স্টাডিজ নামে কয়েকটি সংগঠনে সক্রিয় ছিলেন বলে সিরাজুল জানান।

 

Share if you like

Filter By Topic