Loading...

সহিংসতার মধ্যেই আল-আকসায় ঈদ জামাত

| Updated: May 14, 2021 15:39:52


পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদ জামাতে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদ জামাতে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স

সংঘাত-সহিংসতা, আর মৃত্যুর মধ্যে ঈদ এল ফিলিস্তিনে।  খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর।

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা আর উচ্ছেদ অভিযানের প্রস্তুতির মধ্যেই মাসব্যাপী রোজার পর বৃহস্পতিবার আল-আকসায় ঈদের নামাজ আদায় করে ফিলিস্তিনিরা।

জেরুজালেম পোস্ট জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ পড়েন লাখো মুসলমান।

জামাতে অংশ নেওয়া তরুণদের ফিলিস্তিনি পতাকা নেড়ে ‘গাজার বিজয়’ চেয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সোনালী গম্বুজের ‘ডোম অব দ্য রক’ এর সামনে বড় ব্যানারও টাঙানো হয়।

জেরুজালেমের দুই অংশের মধ্যে পূর্ব অংশে মূলত মুসলমান ফিলিস্তিনিদের বাস, পশ্চিম অংশ ইসরায়েলি অধ্যুষিত।

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে উত্তপ্ত ওই অঞ্চল। এরপর ইসরায়েলের ‘জেরুজালেম দিবস’ পালনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

একদিকে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় গোলাবর্ষণ করছে, অন্যদিকে রকেট হামলা চালিয়ে তার জবাব দিচ্ছে গাজাবাসী ফিলিস্তিনিরা।

গোলায় ধ্বংস দেখে আর স্বজাতির মৃত্যুর শোক নিয়েই এবার ঈদ উদযাপন করছে ফিলিস্তিনি মুসলমানরা।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও ফিলিস্তিনি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান থেকে গোলা ছোড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানানো হয়, হামলায় সোমবার থেকে ১৭ শিশুসহ ৮৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮৭।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র হিদাই জিলবারম্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধানের অনুমোদনের জন্য গাজায় ‘স্থল অভিযান’ শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সম্ভাব্য অভিযানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে গাজায় দুই ব্রিগেড সেনা পাঠানো হয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানৎজ পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরে ‘ব্যাপক মাত্রায় শক্তিবৃদ্ধির’ নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “জাতীয় পর্যায়ের এই সংঘাতে আমরা এখন জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে আছি। পদাতিক বাহিনীতে ব্যাপকভাবে শক্তি বাড়াতে হবে। এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের দ্রুত পাঠাতে হবে।”

এই বাহিনীতে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে দায়িত্ব পালনকারী ইসরায়েলি সীমান্ত পুলিশকে যোগ করার কথাও স্পষ্ট করেন তিনি।

২০১৪ সালে গাজা যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘাত।

তুরস্কের ত্রাণ সহায়তা সংস্থা ইয়ারদিমেলি জানিয়েছে, ঈদের দিনেও গাজার পশ্চিমাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমানের গোলায় একটি পাঁচতলা ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ভবনে আবাসিক ফ্ল্যাট এবং বাণিজ্যিক দোকান ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভবনটির মালিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার হামলার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাকে ফোন করে ভবনটি খালি করতে বলে। পরে জানানো হয়, হামাসের গোয়েন্দারা ভবনটি ব্যবহার করত।

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরায়েলি বোমায় আরও তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলেও টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবরে জানানো হয়।

এদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো গাজা থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় এপর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রে একজন ইসরায়েলি সৈন্য মারা গেছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, সোমবার থেকে এক হাজার ৬০০টি রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। এর মধ্যে ৪০০টি গাজাতেই আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৯০ শতাংশ রকেট ঠেকিয়ে দিয়েছে।

এ পর্যন্ত গাজায় ৬০০টি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

 

Share if you like

Filter By Topic