কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। উদ্দেশ্য ছিল নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে সরকার উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর।
রিমান্ডে থাকা মামুনুল হক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ- কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ।
মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক।
তিনি বলেন, "হেফাজতের নেতাকর্মীদের উসকানি দিতেন মামুনুল। তিনি বলতেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে হেফাজতের সমর্থন ছাড়া কেউ ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।"
চলতি মাসের শুরুতে সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টকাণ্ডের পর হেফাজতের ভাংচুর ও সহিংসতা এবং একাধিক বিয়ে নিয়ে আলোচনায় আছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল, যিনি দলটির ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদকও।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে রোববার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদসংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদসংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার হারুন বলেন, "মোহাম্মদপুর থানার মামলার বাদির অভিযোগ ধরে এবং সেদিনের হামলার ভিডিও দেখিয়ে মামুনুলকে প্রশ্ন করা হয়- মসজিদের সাদপন্থী লোকদের মারপিট করা হল কেন? তিনি বলেছেন, এটি ঠিক হয়নি।"
"মামুনুল ও তার অনুসারীরা মূলত তাবলীগের অন্য গ্রুপ জুবায়ের পন্থি। তাই মামুনুল ভেবেছিলেন সাদপন্থিদের পিটিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দিলে তারা দুর্বল হয়ে যাবেন।"
“জিজ্ঞাসাবাদের সময় মামুনলকে তার কয়েকটি ওয়াজের ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে তিনি সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে উসকানি দিয়েছেন। শাহরিয়ার কবিরকে মুরগি চোর বলা, হাসানুল হক ইনু ও সাবেক বিচারপতি শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিককে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই জুতা পেটা করার কথা বলে লোকজনকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। এসব বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মামুনুল বলেন, ‘জোসের কারণে এসব মন্তব্য করে ফেলেছি’।"
মামুনুল হকের পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের মদদ আছে কিনা সেটিও ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞেস করা হবে এবং তাকে কেউ ইন্ধন দিয়ে থাকলে কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজত নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালায়। ওই সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন।
এরপর থেকে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু হয়। দলটির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য পর্যায়ের নেতাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর মধ্যে রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামুনুল হককে।