সংস্কারের অভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে থাকা নেত্রকোণা-কেন্দুয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। সংস্কারহীন এ সড়কের পুরোটা জুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
জেলা সদরের বনুয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে কেন্দুয়া সদর পর্যন্ত প্রায় ২৬.৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের স্থানে স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে। এর মধ্যে রামপুর বাজার ও মদনপুরের জায়গাগুলোতে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তায় প্রায়ই রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, মোটর সাইকেল, ইঞ্জিনচালিত অটো রিকশা, সিএনজি, বাস, মাল বোঝাই ট্রাক, পিকআপ, লড়িসহ অন্যান্য যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এর ফলে শহরে সব সময় যানজট লেগেই থাকে।
এ রাস্তা বর্তমানে পথচারীদের পায়ে হেঁটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেটের বাসযাত্রীরা চলাচল করেন। এমনকি ট্রাকে করে জেলা এবং জেলার বাইরে থেকে পণ্য আনা-নেয়া করা হয়। তাই স্থানীয়দের পাশাপাশী এসব যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জরুরি রোগীদের নিয়ে দ্রুত হাসপাতালগামী যানবাহন এবং চাকরিজীবীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও সময়মতো গন্তব্যে যেতে পারছে না। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রাণহানিও হচ্ছে।
স্থানীয় বাসচালক সুমন মিয়া বলেন, “সংস্কারের অভাবে সড়কে চলাচল অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পুরো রাস্তাটিতে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্তের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে এক অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছি আমরা। তাই যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় পড়তে পারি।”
মাসুদ মিয়া নামে এক সিএনজি চালক জানান, “খুবই ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। সড়ক জুড়ে গর্ত আর ভাঙাচোরা থাকায় অনেকসময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছি আমরা।”
এ বছরের নেত্রকোণা-কেন্দুয়া সড়কের এক অংশ, ১৮ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ৫০ কোটি টাকার টেন্ডার আহবান করা হলে কাজটি পায় ফখরুজ্জামান বাচ্চু নামে ভাওয়াল কনস্ট্রাকশান এবং ৯ কিলোমিটার কম অংশের কাজটি পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তানভীর কনস্ট্রাকশান এম এম বির্ল্ডাস। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে সড়কে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার শাহাদাত বলেন, “এপ্রিল মাসের দিকে কার্যাদেশ পেয়েই সড়কে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।”
নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজীব কুমার দাস বলেন, “রাস্তার পানি চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই।” এজন্য তিনি অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ী করেন। তিনি আরো বলেন, “চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত তদারকি করছি। সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে জনভোগান্তি আর থাকবে না।”