Loading...

কারা টাকা সাদা করেন?

| Updated: July 23, 2021 12:49:33


কারা টাকা সাদা করেন?

কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত আয় যেটাই বলা হোক না কেনো সুযোগটা নানা সমালোচানার পর ও প্রায় প্রতি বছরই দেয়া হয়। বাজেটের মুল চমক থাকে কি প্রক্রিয়ায় এই টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হবে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে প্রায় ১০,৪০৪ জন ব্যাক্তিশ্রেণির করদাতা এই সুযোগ গ্রহণ করেছেন। প্রশ্ন হলো, এরা কারা?

আয়কর আইনে এই অপ্রদর্শিত আয়ের সুত্র জানতে চাওয়ায় বাধা আছে। তবে এই অর্থের মালিক কারা সেটা যারা অর্থনীতি নিয়ে নাড়াচাড়া করেন তারা অনুমান করতে পারেন। এই টাকা কে কালো না অপ্রদর্শিত বলা হবে তা নিয়েও ভিন্নমত আছে। বাজেট পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল "কালো টাকা সাদার সুযোগ আগামী অর্থবছরে চলমান থাকবে কিনা?" তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি কালো টাকা সাদার কোনো সুযোগই কখনও দেন নি, দিয়েছেন অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ৷

যে টাকার সুত্র প্রকাশে আইনী বাধা থাকে সে টাকা কালো, সাদা নাকি অপ্রদর্শিত তা কেমন করে নিশ্চিত হওয়া যাবে?

এবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী অপ্রদর্শিত আয়ের সুযোগ থাকছে কি না বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও, অর্থ আইনে তা পরে সংযোজিত হয়েছে। যদিও জাতীয় সংসাদের বাজেট সেশনে তিনি এই বিষয়ে একটি বাক্য ও বলেননি।

বাজেট ঘোষণার পর বিভিন্ন দাবী দাওয়া পুর্নবিবেচনার প্রস্তাব থাকে যেখানে কালো টাকার সুবিধা চেয়ে প্রকাশ্য খুব একটা জোর দাবী দেখা যায়না। উল্টো ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সহ বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে এই সুবিধা অর্থবিলে না রাখায় সাধুবাদ জানানো হয়েছিল। তাহলে, কারা এই টাকা সাদা করার সুযোগ চেয়েছিলেন? কোন ধরনের আয়ের বা পেশার ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা তারা? যারা টাকা পাচার করে বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম করেছেন এরা কি তারা? এতে কি টাকা পাচার কমেছে? পাচারকারীরা কি এই সুযোগ কে আর্কষনীয় মনে করে টাকা পাচার থেকে বিরত থাকবেন? এমন আরো হাজারো প্রশ্ন করা যায় কালো টাকা সাদার সুযোগ নিয়ে।

জানা গেছে, এ টাকা সাদার সুযোগ নেন কিছু নিরীহ লোক, যারা হয়তো ভুলক্রমে বা অন্য কোন কারনে তাদের সম্পদ আয়কর বিবরণীতে দেখাননি। ডাক্তার, সরকারি চাকুরীজীবি, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কিছু সাধারণ ব্যাবসায়ী এই সুযোগ গ্রহন করেন আর এতেই সংশ্লিষ্টরা তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন যে উল্লেখযোগ্য পরিমান টাকা সাদা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অর্থনীতিতে কালো টাকার পরিমানের অতি ক্ষুদ্র এক অংশ সাদা হয় এই ধরনের সুবিধায়। যারা বিশাল অংকের কালো টাকার মালিক তারা ধরাছোয়ার বাইরেই রয়ে যান। যতদিন পর্যন্ত না আইনের প্রয়োগকারীরা শক্ত হাতে ও সততার সাথে কালো টাকার মালিকদের আইনের আওতায় আনবেন ততদিন পর্যন্ত ধুসর বা কালো অর্থনীতিকে মুল ধারার সাথে সংযুক্ত করা যাবে না। তাই আইনের ধারা দিয়ে সহজ প্রক্রিয়ায় কালো অর্থনীতিকে ধরা নয়, প্রয়োজন আইনের সঠিক প্রয়োগ।

দেশে কর দেয়ার সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠে নি তা বোঝা যায় কর-জিডিপির হার দেখে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ২৪ লক্ষ ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা তাদের আয়কর বিবরণী দাখিল করেন। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি কর-জিডিপিতে তেমন বিল্পব ঘটাতে পারে নি, উল্টো সৎ ও নিয়মিত করদাতারা এই ধরনের সুযোগ দেয়ার ফলে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

[email protected]

Share if you like

Filter By Topic